ফরজ নামাজের পর নবীজির আমল সমূহ
নামাজ মুমিনের সবচেয়ে বড় এবাদত! এর মাধ্যমে বান্দা তার প্রভুর সান্নিধ্য লাভ করেন। নামাজের পর কিছু আমল করা যেতে পারলে হৃদয়ে একটু বেশিই প্রশান্তি লাভ হয়। আর তা যদি হয় প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর সাদৃশ্যপূর্ণ তাহলে তো আর কোন কথাই নয়। তাই আপনিও কি আপনি জানতে চাচ্ছেন ফরজ নামাজের পর নবীজির আমল কি ছিল এবং ফরজ নামাজের পর আমল কি কি?
হ্যাঁ বন্ধুরা যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে আজকের আয়োজন আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি ফরজ নামাজের পর নবীজির আমল এবং মাসনুন দোয়া সমূহ। যা আপনার দৈনন্দিন আমলে সহায়ক হবে! ইনশাআল্লাহ।
নবী (সাঃ) ইরশাদ ফরমানঃ-
প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর কিছু দোয়া (আমল) রয়েছে, যে কেউ দোয়াগুলো পরে এবং কাজে লাগায় সে কখনোই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। (মুসলিম শরীফ ১২৩৭)
উল্লেখ্য হাদিস দ্বারা ফরজ নামাজের পর দোয়া (আমল) কতটা গুরুত্ব তা বোঝা যায়। কাজেই বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া নামাজের পরের আমলগুলো থেকে বিরত থাকা সমচীন নয়।
ফরজ নামাজের পর নবীজির আমল সমূহ
দোজাহানের বাদশা রহমতে আলম নবী করীম সাঃ প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর ১৩ টি দোয়া পড়তেন। দোয়া গুলো খুবই ছোট এবং সহজ। তাই আমাদের উচিত আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় নবীজির তরিকা অনুযায়ী ফরজ নামাজ আদায় করে দোয়াগুলো পাঠ করা। নিম্নে দোয়া গুলো টেবিল আকারে আরবি বাংলা উভয়ভাবে উল্লেখ করা হলোঃ-
ক্রমিক |
আরবি |
বাংলা উচ্চারণ |
বার |
০১ |
“أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ |
আস্তাগফিরুল্লাহ। |
৩বার |
০২ |
ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺃَﻧْﺖَ ﺍﻟﺴَّﻼَﻡُ، ﻭَﻣِﻨْﻚَ ﺍﻟﺴَّﻼَﻡُ، ﺗَﺒَﺎﺭَﻛْﺖَ
ﻳَﺎ ﺫَﺍ ﺍﻟْﺠَﻼَﻝِ ﻭَﺍﻟْﺈِﻛْﺮَﺍﻡِ |
আল্লাহুম্মান্তাসসালাম – অমিঙ্কাস সালাম- তাবারাক্তা ইয়া জালজালালী ওয়াল ইকরাম। |
১বার |
০৩ |
اَللّهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ عِلْماً نَّافِعاً وَّرِزْقاً
طَيِّباً وَّعَمَلاً مُّتَقَبَّلاً |
আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা ইলমান নাফিয়া ওয়া রিজকান তায়্যিবা ওয়া মালাম মুতাকব্বালা। |
১বার |
০৪ |
«لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، لَهُ
الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ يُحْيِي وَيُمِيتُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ
قَدِيرٌ» |
লাইলাহা ইল্লাল্লাহু অহদাহু লা-শারিকালাহু,
লাহুল মুল্কু অলাহুল হামদু য়ুহয়ি অয়ুমিতু অহুয়ালাকুল্লি সাইয়িন কদির। |
১০বার |
০৫ |
اَللّهُمَّ قِنِيْ عَذَابَكَ يَوْمَ تَبْعَثُ عِبَادَكَ |
আল্লাহুম্মা কিনি আজাবাকা ইয়াউমা তাবআছু ইবাদাক। |
১বার |
০৬ |
ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺃَﻋِﻨِّﻲ ﻋَﻠَﻰ ﺫِﻛْﺮِﻙَ، ﻭَﺷُﻜْﺮِﻙَ،
ﻭَﺣُﺴْﻦِ ﻋِﺒﺎﺩَﺗِﻚَ |
আল্লাহুম্মা আয়িন্নি আলা জিকরিকা,অ শুকরিকা,অ হুসনি ইবাদিক। |
১বার |
০৭ |
سوره الاخلاص سوره الفلق سوره الناس |
সূরা আল-ইখলাস, সূরা আল-ফালাক, সূরা আল-নাস। |
১বার |
০৮ |
سبحان الله(٣٣) الحمد لله(٣٣) الله اكبر(٣٤) |
সুবহানাল্লাহ(৩৩) আলহামদুলিল্লাহ(৩৩) আল্লাহু আকবার(৩৪) |
মোট ১০০ |
০৯ |
ايه الكرسي |
আয়াতুল কুরসি |
১বার |
১০ |
لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِالله |
লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ |
১বার |
১১ |
اَللّهُمَّ لاَ مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَلاَ مُعْطِىَ
لِمَا مَنَعْتَ وَلاَ يَنْفَعُ ذَا الَجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ |
আল্লাহুম্মা লা-মানিয়া লিমা আয়তাইতা অলা মুয়তিয়া লিমা মানায়তা অলা ইয়ানফায়ু যাল জাদ্দি মিনকাল জাদ্দি। |
১ বার |
১২ |
لاَ إِلهَ إِلاَّ الله وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ، لَهُ
الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَ هُوَ عَلى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ |
লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু অহদাহু লা-শারিকালাহু লাহুল্মুল্কু অলাহুলহামদু অহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কদির। |
১বার |
১৩ |
لآ إِلهَ إِلاَّ اللهُ وَلاَ نَعْبُدُ إِلاَّ إِيَّاهُ لَهُ النِّعْمَةُ
وَلَهُ الْفَضْلُ وَلَهُ الثَّنَاءُ الْحَسَنُ، لاَ إِلهَ إِلاَّ اللهُ
مُخْلِصِيْنَ لَهُ الدِّيْنَ وَلَوْ كَرِهَ الْكَافِرُوْنَ |
লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু অলা নায়বুদু ইল্লাল্লাহু লাহুন নিয়মাতা অলাহুল ফাদলু অলাহুছানায়ু,
লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুখলিসিনা লাহুদ্দিনা অলাও কারহাল কাফিরুন। |
১বার |
আরোও কিছু দোয়াঅ (আমল)
আরবি | বাংলা উচ্চারণ | বার | ||
---|---|---|---|---|
درود الشريف | দুরুদ শরীফ/ ফজর এবং মাগরিবের পর | ১০ বার | ||
رضيت بالله ربا وبالاسلام دينا وبمحمد نبيا صلى الله عليه وسلم | রাদিতুবিল্লাহি রব্বাও,ওয়াবিল ইসলামি দ্বীনও,ওয়াবি মোহাম্মদননাবিয়ান সাঃ। ফজর এবং মাগরিবের পর | ৩বার | ||
سبحان الله وبحمده | সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি/ফজর এবং মাগরিবের পর | ১০০বার |
ফরজ নামাজের পর কি কি আমল করতে হয়?ফরজ নামাজের পর যে সকল আমলগুলো করা যায়। সুবহানাল্লাহ(৩৩) আলহামদুলিল্লাহ(৩৩) আল্লাহু আকবার(৩৪) এবং আয়াতুল কুরসি ১ বার আরো বিস্তারিত জানতে পুরো আর্টিকেলটি পড়ুন। শেষ কথাএই আর্টিকেলের মাধ্যমে ফরজ নামাজের পর নবীজির আমল সমূহ জানতে পারলাম। আসলে জানার নাম কামিয়াব নয় মানার নাম কামিয়াব। এখন আমাদের কর্তব্য হলো দৈনন্দিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর তাসবিহ গুলো আদায় করার চেষ্টা করা। প্রতি ওয়াক্তে না পারলেও কমপক্ষে যেই নামাজ গুলোর পর আমরা পর্যাপ্ত টাইম পাব ধরুন ফজর কিংবা মাগরিব /ইশায় চেষ্টা করব তাসবীহ গুলো আদায় করার। আর পর্যাপ্ত টাইম না হলে কমাস কম ছোট যেই তাজবীহগুলো রয়েছে সেগুলো আদায় করার। আল্লাহ আমাদের তৌফিক দান করুন। আমিন। |
No comments