যে তিনটি কাজ আল্লাহ তাআলার কাছে অধিক প্রিয়
কিয়ামতের দিন প্রত্যেক মানুষের হিসাব নেয়া হবে। তার জীবনের কার্যাবলীর বিবরণ আমলনামায় লেখা থাকবে। যার আমলনামায় ভালো কাজ বেশি তার আমলনামা ডান হাতে দেয়া হবে। যার আমলনামায় মন্দ কাজ বেশি তার আমলনামা বাম হাতে দেয়া হবে।

আমলনামায় ভালো কাজ বাড়ানোর ক্ষেত্রে সংখ্যা যেমন গুরুত্বপূর্ণ সেই সাথে কাজের গুণগত মানও গুরুত্বপূর্ণ। ভালো ভালো কাজগুলো আমলনামায় যুক্ত করার জন্য সাহাবায়ে কেরাম প্রতিযোগিতা করতেন। নবীজি (স.)-কে সে ব্যাপারে জিজ্ঞেস করতেন। সেরকমই একটি হাদিস হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন,
আমি রসুলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, কোন কাজ (আমল) আল্লাহর কাছে বেশি প্রিয়? তিনি বললেন, সঠিক সময়ে নামাজ আদায় করা। আমি বললাম, এরপর কোন কাজ? তিনি বললেন, মা-বাবার সঙ্গে সৎ ব্যবহার করা। আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, এরপর কোন কাজ? তিনি বললেন, আল্লাহর পথে জিহাদ করা। (বুখারি ৫০২, মেশকাত ৫৬৮)
যে ব্যক্তি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সময়মতো আদায় করে আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করে দেন। রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যা আল্লাহ তাআলা (বান্দার জন্য) ফরজ করেছেন। যে ব্যক্তি এ নামাজের জন্য ভালোভাবে অজু করবে, সঠিক সময়ে আদায় করবে এবং এর রুকু ও খুশুকে পরিপূর্ণরূপে করবে, তার জন্য আল্লাহর ওয়াদা রয়েছে যে, তিনি তাকে ক্ষমা করে দেবেন। আর যে তা না করবে, তার জন্য আল্লাহর ওয়াদা নেই। ইচ্ছা করলে তিনি ক্ষমা করে দিতে পারেন, আবার ইচ্ছা করলে শাস্তিও দিতে পারেন। (মেশকাত ৫৭০)
আর নামাজ একজন মুসলমানের পরিচয় নিশ্চিত করে। হজরত জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমি রসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ঈমান ও কুফরের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে নামাজ পরিত্যাগ করা। (মুসলিম ১৪৯)
নামাজের মতো পিতামাতার খেদমতের বিষয়ে আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে আদেশ দিয়েছেন, ‘তোমরা ইবাদত করো আল্লাহর, তাঁর সঙ্গে কোনোকিছুকে শরিক করো না। আর সদ্ব্যবহার করো মাতাপিতার সঙ্গে, নিকটাত্মীয়ের সঙ্গে, ইয়াতিম, মিসকিন, প্রতিবেশী, অনাত্মীয় প্রতিবেশী, পার্শ্ববর্তী সঙ্গী, মুসাফির এবং তোমাদের মালিকানাভুক্ত দাস-দাসীদের সঙ্গে। নিশ্চয়ই আল্লাহ পছন্দ করেন না তাদের যারা দাম্ভিক ও অহংকারী।’ (সুরা নিসা ৩৬)
কীরকম আচরণ করা হবে সে ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা বলেন, আর তোমার রব আদেশ দিয়েছেন যে, তোমরা তাঁকে ছাড়া অন্য কারও ইবাদাত করবে না এবং পিতামাতার সঙ্গে সদাচরণ করবে। তাদের একজন অথবা উভয়েই যদি তোমার নিকট বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদেরকে ‘উফ’ বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না। আর তাদের সঙ্গে সম্মানজনক কথা বলো। (সুরা বনি ইসরাইল ২৩)
জিহাদের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহর পথে মুজাহিদদের তুলনা ওই রোজাদার ও নামাজ আদায়রত অবস্থায় তিলাওয়াতকারীর ন্যায়, যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় মুজাহিদের ঘরে ফিরে না আসা পর্যন্ত রোজা পালনে ও নামাজ আদায়ে নিমগ্ন থাকে। (বুখারি ২৫৯৬, মেশকাত ৩৭৮৮)
No comments