সাম্প্রতিক পোষ্ট

সূরা তাওবার শেষ দুই আয়াত তেলাওয়াতের ফজিলত

  

সূরা তাওবাহ পবিত্র কোরআন মাজীদের নবম সূরা। এই সূরাটি মদিনায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এর আয়াত সংখ্যা ১২৯ টি। আরবি তওবা অর্থ ক্ষমা। সুরাটির শুরুতে বিসমিল্লাহ নেই। আওয়ার ইসলাম

একে সূরা তওবা বলা হয়, কারণ এতে মুসলমানদের তওবা কবুল হওয়ার বর্ণনা রয়েছে। সূরাটির অন্য নাম হলো বারাআত-একে বারাআত বলা হয় কারণ, এতে কাফেরদের তথা অবিশ্বাসীদের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ ও তাদের ব্যাপারে দায়িত্ব-মুক্তির উল্লেখ আছে। সূরাটি বেশ ফজিলতপূর্ণ। তবে এই সূরার শেষ দুই আয়াতের ফজিলত অনেক অনেক বেশি। তাওবার শেষ দুই আয়াত ও তার ফজিলত তুলে ধরা হলো:-

لَقَدْ جَاءكُمْ رَسُولٌ مِّنْ أَنفُسِكُمْ عَزِيزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيصٌ عَلَيْكُم بِالْمُؤْمِنِينَ رَؤُوفٌ رَّحِيمٌ
উচ্চারণ :  লাক্বাদ জা-আকুম রাসু-লুম মিন আন ফুসিকুম আজিজুন আলাইহি মা-আনিত্তুম হারিছুন আলাইকুম বিল মুমিনিনা রাউফুর রাহীম।

তোমাদের কাছে এসেছে তোমাদের মধ্য থেকেই একজন রসূল। তোমাদের দুঃখ-কষ্ট তার পক্ষে দুঃসহ। তিনি তোমাদের মঙ্গলকামী, মুমিনদের প্রতি স্নেহশীল, দয়াময়। (সুরা তাওবা, আয়াত: ১২৮)

فَإِن تَوَلَّوْاْ فَقُلْ حَسْبِيَ اللّهُ لا إِلَـهَ إِلاَّ هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ
 উচ্চারণ : ফাইন তা’ওয়াল্লাও ফাকুল হাসবিয়াল্লাহু লা-ইলা-হা ইল্লা-হুয়া আলাইহি তাওয়াক্কালতু ওয়া হুয়া রাব্বুল আরশিল আজিম।

এ সত্ত্বেও যদি তারা বিমুখ হয়ে থাকে, তবে বলে দাও, আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট, তিনি ব্যতীত আর কারো বন্দেগী নেই। আমি তাঁরই ভরসা করি এবং তিনিই মহান আরশের অধিপতি। (সুরা তাওবা, আয়াত: ১২৯)

ফযীলতঃ
  • যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরয নামাযের পর এ দুইটি আয়াত তিলাওয়াত করবে কেয়ামতের দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার জন্য শাফায়াত করবেন। 
  •  হযরত আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায় সূরা তাওবার শেষ দু’টি আয়াত ৭ বার করে পাঠ করবে আল্লাহতায়ালা তার সব কাজ সহজ করে দিবেন। (কুরতুবী)
  • কোনো বিপদ আপদে পতিত হলে এ আয়াত দুটি তিলাওয়াত করলে তার থেকে বিপদ দূর হয়ে যায়। 
  •  যে দিন এ দু’টি আয়াত তিলাওয়াত করবে সেদিন তার মৃত্যু হবে না। (মৃত্যু না হওয়ার অর্থ হলো আল্লাহ তায়ালার নির্ধারিত মৃত্যুর দিন আয়াত দুটি তিলাওয়াত করার তৌফিক হবে না।) 
  • এ আয়াত দুটি তিলাওয়াতকারীকে কেউ অন্যায়ভাবে হত্যা করতে পারবে না। (ফাযায়েলে কুরআন)
  • অন্য এক বর্ণনায় আছে, যে ব্যক্তি এ দুই আয়াত পাঠ করে কোনো বিচারকের সামনে যাবে বিচারক তার প্রতি সহৃদয়তা ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করবে।  
এ আয়াতের ফযীলত সর্ম্পকে একটি শিক্ষণীয় ঘটনাঃ
হযরত আবু বকর মুজাহিদ নামক এক ব্যক্তি স্বপ্নযোগে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দেখলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হে আবু বকর! আগামী কাল তোমার কাছে একজন জান্নাতী লোক আসবে, তুমি তাকে সম্মান করবে। পরদিন হযরত শিবলী রহ. আসলেন, হযরত আবু বকর মুজাহিদ রহ. তাকে অনেক সম্মান করলেন। দ্বিতীয়বার স্বপ্ন যোগে আবার রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে দেখলেন তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবু বকরকে দোয়া দিয়ে বললেন, তুমি শিবলীর সম্মান করেছো আল্লাহ তায়ালা তোমাকে সম্মান দান করবেন। আবু বকর মুজাহিদ রহ. রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর খেদমতে আরজ করলেন, হযরত শিবলী রহ. এর বেশী সম্মান পাওয়ার কারণ কি? উত্তরে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, শিবলী দীর্ঘ ৮০বছর যাবত প্রত্যেক ফরয নামাযের পর এ দুটি আয়াত নিয়মিত তিলাওয়াত করে আসছে।
যে ব্যক্তি ফরয নামাযের পর এ দুটি আয়াত তিলাওয়াত করবে আল্লাহ তায়ালার রহমতে সে প্রত্যেক ভালো কাজে সফলতা লাভ করবে। অসম্মানিত থাকলে সম্মানিত হবে। ঋণগ্রস্ত থাকলে ঋণ পরিশোধ করতে পারবে। চিন্তাযুক্ত থাকলে চিন্তা মুক্ত হয়ে যাবে। (নুরুল কুলুব)
হযরত ইবনে আব্বাস রাযি. বলেন, কোনো অত্যাচারী বাদশাহের জুলুমের ভয় হলে বা হিংসুকের হিংসার আশংকা থাকলে কিংবা সামনে নিমজ্জিত হওয়ার ভয় হলে এ দুটি আয়াত তিলাওয়াত করলে ইনশা-আল্লাহ সে এ থেকে রক্ষা পাবে।
 
 

No comments